ঢাকার যে ৪ টি আসনে আ.লীগের প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি এখনো প্রায় দেড় বছরের মতো। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ পুরোদমেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে আবারো ক্ষমতায় আসতে ঐতিহ্যবাহী দলটি আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটিও করছে সুচারুভাবে। খোদ প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি হিসাবে শেখ হাসিনা নিজেই বিষয়টি দেখভাল করছেন। আগামী নির্বাচন যেহেতু সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন তাই দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে চুলচেঁরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বাঙালী কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছে, সারাদেশের মতো ঢাকাতেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ে নজর দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি ঢাকার কমপক্ষে ৪ টি আসনে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন। যেখানে বর্তমান এমপিদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ, তৃণমূল বিচ্ছিন্নতা থেকে শুরু করে তাদের আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। ঢাকার যে ৪ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে সেটি নিয়ে আমাদের আজকের বিশেষ প্রতিবেদন।

ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর) আসনে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপির আসনে মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদ। যথেষ্ট ক্লিন ইমেজ নিয়ে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তরুণ এই উপজেলা চেয়ারম্যান। সারাদেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব নিয়ে সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন শাহিন আহমেদ। অন্যদিকে, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে তেমনভাবে সম্পৃক্ত নন। এমনকি অতিকথনে পারদর্শী এ মন্ত্রী গম কেলেংকারির কারণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন।

ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির বাবলা এ আসনে জোটের মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত সমন্বয়কারী ড. আওলাদ হোসেন। দশম জাতীয় নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা করেছেন। জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির কারণে গতবার মনোনয়ন না পেলেও এবার শ্যামপুর-কদমতলীর আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর। আওয়ামী লীগের নৌকার টিকেট এবার ড. আওলাদ হোসেনের হাতেই উঠছে বলে জানিয়েছেন দলের সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে বর্তমান এমপি বিএনএফের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ। এবার এখানে প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। সে ক্ষেত্রে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপির নাম শোনা যাচ্ছে। ফারুক খান গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর) থেকে নির্বাচন করে এমপি হয়েছেন কয়েকবার। এবার সেখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার নির্বাচন করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ঢাকার এ আসনে ফারুক খান প্রার্থী হতে পারেন।

ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি বার্ধক্যের কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে। তিনি মনোনয়ন না পেলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের বর্তমান এমপি। এদিকে, চাঁদপুর-৩ আসনে দীর্ঘ দিন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের রাজনীতি করা দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে আগামী সংসদে সংখ্যালঘুদের আসন বাড়ানোর যে চিন্তা রয়েছে, সেটিরই প্রতিফলন ঘটানো হবে বলে মনে করে আ.লীগের হাই কমান্ড।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর